কিডনি কি ? আমাদের শরীরে কি কাজ করে। ভয়ংকর কিডনি রোগের লক্ষন গুলো কি কি। কিডনি সুস্থ রাখার ১১ টি উপায়। 11 ways to keep kidneys healthy.

কিডনি
কিডনি কি এর কাজ কি 

কিডনি বাংলায় যাকে বলে বৃক্ক। এটি আমাদের শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমরা একটি সুপার কম্পিউটারের সাথে এর তুলনা করতে পারি। কারন এর গঠন এবং কার্যাবলী খুবই জটিল। কিডনি শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে মূত্র/প্রস্রাব তৈরি করে। শরীর থেকে মূত্র নিষ্কাশন করার কাজ STAFTFT (Ureter) IAT“FI (Urinary Bladder) SIE মূত্রনালিকা (Urethra) দ্বারা হয়ে থাকে। প্রতিদিন ১৮০ লিটার রক্ত বিশোধন করে এই অঙ্গ। প্রতিদিন প্রায় ২ লিটারের মত প্রস্রাব তৈরি করে।

নারী বা পুরুষ প্রত্যেকের দুটো করে কিডনি থাকে। এই অঙ্গ দুটো পেটের ভিতরে, পিঠের দিকে, মেরুদন্ডের দুই পাশে কোমরের অংশে অবস্থিত। এটি দেখতে অনেক টা সিম বীজের মত। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির কিডনি সাধারণত ১০ সেন্টিমিটার লম্বা, ৫ সেন্টিমিটার চওড়া আর ৪ সেন্টিমিটার মোটা হয়। এই অঙ্গ দুটোর প্রতিটির ওজন ১০৫-১৭০ গ্রামের মধ্যে থাকে।

কিডনি মুত্র তৈরি করে মূত্রাশয়ে পৌঁছায়। এখান থেকে মুত্রনালিতে যায়। মুত্রনালি সাধারণত ২৫ সেঃ মিঃ লম্বা হয়।  আর বিশেষ প্রকারের রাবার জাতীয় মাংসপেশী দ্বারা তৈরি হয় মুত্রনালি। মুত্রাশয় পেটের নীচের অংশে সামনের দিকে (তলপেট) অবস্থিত একটি স্নায়বিক থলি, যার মধ্যে মূত্র জমা হয়। যখন মূত্রাশয়ে ৩০০-৪০০ মিলিলিটার (ml) মূত্র জমা হয়, তখন মূত্ৰত্যাগের বেগ আসে। মূত্রনালি দ্বারা মূত্র শরীর থেকে বাইরে আসে।

আপেল সিডার কেন খাবেন, জেনে নিন বিস্তারিত। 

কিডনি

কিডনি ভালো নেই কিভাবে বুঝবেন 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল রোগী সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করবে। বর্তমানে ৮৫ কোটির বেশি মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য, এরমধ্যে ৭৫ কোটি রোগী জানে না যে, মরণঘাতী এ রোগ নীরবে তাদের কিডনি নষ্ট করে চলেছে।

প্রতি বছর ১ কোটি ৩০ লাখ লোক আকস্মিক কিডনি বিকল রোগে আক্রান্ত হয়। যার ৮৫ ভাগই আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে। উন্নত দেশেও কিডনি বিকলের চিকিৎসা করতে গিয়ে সরকারগুলো হিমশিম খাচ্ছে। ২০২২ সালের এক সমীক্ষায় এসেছে ‘বাংলাদেশে প্রতি ১০০ জনে ৮ থেকে ১০ জন কিডনি সমস্যায় ভুগছেন, অথচ তিনি জানেন না। বিশ্বের জনসংখ্যায় তা ১০০ জনে প্রায় ২৩ জন। আসুন জেনে নেই এই প্রাণঘাতী এই রোগের লক্ষন গুলো। 

শরীরের দুটি কিডনির ৭০-৮০ ভাগ নষ্ট হওয়ার আগে কোনো ধরনের গুরুতর লক্ষণই দেখা দেয় না। তবে শুরুতেই দেখা যেতে পারে নিচের লক্ষণগুলো। যেমন—

কিডনি

১. অতিরিক্ত দুর্বলতা।

২. ক্ষুধামান্দ্য বা খাওয়ার অনিচ্ছা।

৩. কোনো কারণ ছাড়াই বমি বমি ভাব।

৪. কোনো চর্মরোগ ছাড়াই শরীর চুলকানো এবং চামড়া শুষ্ক হয়ে যাওয়া।

৫. প্রস্রাবে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ হওয়া।

৬. প্রস্রাবে বেশি বেশি ফেনা তৈরি হওয়া।

৭. স্বাভাবিকের চেয়ে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া ও পরিমাণে অল্প প্রস্রাব হওয়া।

#  প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া।

# তলপেটে ব্যথা।

# কোমরের অথবা নাভির দুই পাশে ব্যথা।

# প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত আসা বা প্রস্রাবের রং লালচে হওয়া।

# চোখের নিচে বা মুখে পানি আসা বা চোখ–মুখ ফুলে যাওয়া বা শরীর ফুলে যাওয়া।

# যাদের কখনোই উচ্চ রক্তচাপ ছিল না, তাদের উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেওয়া, সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হওয়া।

# মাংসপেশিতে ঘন ঘন টান লাগা বা রগে টান লাগা। এবং ওপরের এসব লক্ষণের সাথে জ্বর আসা।

দ্রুত ওজন কমাতে চান ? আপনার জন্য ন্যাচারাল সমাধান। 

কিডনি

কিডনি সুস্থ কর্মক্ষম রাখতে যা করবেন 
কিডনি সুস্থ রাখতে এই ৭ টি ফলের দিকে নজর দিন 

আমরা যারা সুস্থ আছি তারা এখন থেকেই সচেতন থাকব। কয়েক টি ফলের দিকে খেয়াল করি যা কিডনিকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

তরমুজ –  লাইকোপিন ও পটাশিয়ামসমৃদ্ধ হওয়ায় কিডনির কার্যক্রম সহজ করে তোলে। তরমুজে প্রচুর পানি থাকায় শরীরকে ডিহাইড্রেট হতে দেয় না। শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। ফলে বৃক্কের কার্যকারিতা ভালো থাকে। 
কিডনি
লেবু – শরীরে ক্যালসিয়াম অক্সালেট জমে যাওয়া প্রতিরোধ করে লেবু। লেবুতে আছে প্রচুর সাইট্রিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড ঘন ঘন প্রস্রাব হতে সহায়তা করে। আবার ক্যালসিয়াম অক্সালেট জমে যাওয়া প্রতিরোধ করে লেবু। এই ক্যালসিয়াম অক্সালেট বৃক্কের পাথর তৈরি করে। অর্থাৎ কিডনিতে পাথর প্রতিরোধে লেবু বেশ সহায়ক। এ ছাড়া লেবু শরীর থেকে সব ধরনের টক্সিন দূর করতেও কার্যকর।
কিডনি

আনারসভিটামিন সি ও পটাশিয়াম শরীরের দূষিত পদার্থ দূর করতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আনারসে আছে প্রচুর পানি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা বৃক্কের কার্যকারিতা ভালো রাখতে সহায়তা করে। আনারসে থাকা এই উপাদান গুলো ব্রোমেলিন এনজাইম প্রদাহ কমায়। যা বৃক্কের সঠিক কার্যকারিতার জন্য উপকারী। এ ছাড়া এতে ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম আছে, যা শরীরের দূষিত পদার্থ দূর করতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 

কিডনি

 

আনার, বেদানা বা ডালিমকিডনির প্রদাহ কমায় এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে। ডালিম বা বেদানা বৃক্কের জন্য উপকারী। এতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, ফাইবার বা আঁশ এবং বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আছে।  এই উপাদান গুলো বৃক্কের প্রদাহ কমায় এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক।

কিডনি

কিডনি

আঙুর – ফ্ল্যাভোনয়েড ও রেজভেরাট্রল নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কিডনির কোষকে রক্ষা করে। আঙুরে প্রচুর ফাইবার বা আঁশ ও পানি থাকে, যা বৃক্কের কার্যকারিতা উন্নত করে। আঙুর শরীর থেকে দূষিত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে এবং প্রদাহ কমায়, যা বৃক্কের জন্য ভালো। এ ছাড়া এতে ফ্ল্যাভোনয়েড ও রেজভেরাট্রল নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। 
কিডনি
সেলিম হোসেন – তাং ২৩/১১/২০২৪ ইং – ছবি গুলো প্রতীকী
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *