কর্মী ছাঁটাই – চায়না টেকনিক এবং সারা বিশ্বে। একটি রাশিয়ান গল্প। 1. Golden handshake – The China Technique

কর্মী ছাঁটাই

কর্মী ছাঁটাই সারা বিশ্বে  

করোনা পরবর্তী সময়ে সারা বিশ্বে শ্রমবাজারে মন্দা নেমে আসে। বড় বড় প্রতিষ্ঠান গুলো কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেয়।  কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে বিপুলসংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেছে। কর্মী ছাঁটাইয়ের ঢল নামে গুগল, মেটা, টুইটার সহ বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিস্থানে ২০২২ সালের শেষ দিকে। সেই ঢল এখনো অব্যাহত আছে। প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও অর্থ, গণমাধ্যম, অটোমোটিভসহ আরও নানা সেক্টর থেকে কর্মী ছাঁটাই চলছে।

কর্মী ছাঁটাই নিয়ে বিশেষ প্রতিষ্ঠান লেঅফস ডট ফাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০২৩ সালের জানুয়ারিতেই সারা বিশ্বে প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান থেকে এক লাখের বেশি কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ৩৫৯টি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান থেকে এসব কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। এক মাসে এ সংখ্যা অনেক বেশি, যেখানে ২০২২ সালে পুরো বছরে ১ লাখ ৬০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে।

বৈশ্বিক অর্থনীতি এখনো অনিশ্চিত অবস্থায় আছে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও রাজস্বঘাটতির কারণে অনেক কোম্পানি আরও কর্মী বিদায় করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব দেখে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও কারণ ছাড়া কর্মী বিদায়ের পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে। সে আশঙ্কাও আছে। এর অর্থ, হাজারো কর্মী চাকরি হারাবেন। কর্মীদের এ চাকরি হারানোর খবর জানানোর পদ্ধতি প্রতিষ্ঠানভেদে আলাদা আলাদা দেখা যাচ্ছে।  

মোবাইল ছাড়া কি চলে, হ্যা চলে। জেনে নিন অনুভুতি কেমন, সমস্যা কি । 

কর্মী ছাঁটাই

কর্তা ব্যাক্তিদের নানান রকম যুক্তি আছে কর্মীদের চাকুরিচুত্যি করার পক্ষে। তারা বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে প্রমান করার চেষ্টা করেন, কর্মী বিদায় করা প্রয়োজন। কেউ কেউ আবেগঘন বার্তা দিয়ে, কেউ দুঃখ প্রকাশ করছেন। আবার কেউ ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে কর্মীদের জানিয়েছেন। এমন ছাঁটাইয়ের অধিকাংশ খবরই আবার কর্মীরা জানতে পারছেন ই-মেইল বা জুম ভিডিও কলে। কর্মীদের বিদায় করতে কোম্পানির সিইও দের মনোভাব কি সহানুভুতি পূর্ণ নাকি কোম্পানি বাঁচাতে প্রান প্রচেষ্টা। প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। তবে চায়না কোম্পানি টি একটি ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছে। 

কর্মী ছাটাই চায়না কোম্পানি 

কর্মী ছাটাই করা প্রয়োজন। কারন ব্যাবসা ভাল চলছিল না। চীনের শানসি প্রদেশের একটি বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান। ছোট প্রতিষ্ঠান, কর্মী সংখ্যা ২০ জন। ছাঁটাই করলে বড় অংকের অর্থ গুনতে হবে। কর্মীরা বহাল থাকলে বেতন গুনতে হবে।   

একটি বড় সিদ্ধান্ত নিলেন প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি অফিস বদলে ফেললেন। প্রতিষ্ঠানটির চ্যাং নামে সাবেক এক কর্মী বলেন। হঠাৎ একদিন তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কুইনলিং পর্বতমালায়।এলাকাটি খুবই দুর্গম। শহর থেকে সেখানে যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। যাতায়াতের জন্য গাড়িও পাওয়া যায় না।

পড়ুন – মদ খাওয়ার পর শরীরে কি কি প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। 

কর্মী ছাঁটাই 


চ্যাংয়ের কথায়, ‘আমার সহকর্মী অনেকের গাড়ি নেই। আমাদের যাতায়াতের উপায় বাস সার্ভিস। আর বাসও ছাড়ে তিন ঘণ্টা পরপর। এরপর আরও তিন কিলোমিটার পাহাড়ি পথে হেঁটে পৌঁছাতে হতো নতুন কার্যালয়ে।’  

নতুন কার্যালয়ের পরিবেশও ভালো না। নারী কর্মীদের আশপাশের গ্রামের টয়লেট ব্যবহার করতে হত। এ জন্য তাঁদের অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হত। এ ছাড়া দুর্গম এলাকা হওয়ায় রাতে ফেরার পথেও ছিল নিরাপত্তার অভাব। বিশেষ করে ছিল কুকুরের আক্রমণের ভয়।   

এসব প্রতিকুলতার মুখে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েন। প্রতিষ্ঠানটির ২০ জনের বেশি কর্মীর মধ্যে আমি সহ ১৪ জনই একসাথে চাকরি ছেড়ে দিই। আমরা অবাক করা খবর পাই। চাকরি ছাড়ার মাত্র চার দিন পরই প্রতিষ্ঠানটি পূর্বের কার্যালয়ে ফিরে গেছে। শহরে ফিরেই বিজ্ঞাপন দেয় নতুন কর্মী নিয়োগের।     

পড়ুন – ইঁদুর মদ খায়। কেমন করে খায়। 

কর্মী ছাঁটাই 

কর্মী ছাঁটাই করছে !! 

আমরা নিশ্চিত কর্মী ছাঁটাই করতেই কার্যালয় সরানোর ওই ফন্দি আঁটা হয়েছিল। সাবেক অন্য এক কর্মীর ভাষ্য, ‘আমাদের বলা হয়েছিল বহুদিন ধরে পার্বত্য অঞ্চলে আমাদের কাজ করতে হবে। যদি তারা এই অল্প সময়ের কথা আমাদের জানাত, তাহলে কঠিন পরিবেশের মধ্যেও আমরা চাকরি ছাড়তাম না। ঘটনাটি আলোড়ন তুলেছে চীনের সংবাদপত্র গুলোতে। 

কর্মী ছাঁটাই – চায়না টেকনিক

সাংবাদিক রা প্রতিষ্ঠানটির কর্তার যোগাযোগ করেন। বলেন ” কর্মী ছাঁটাই করতে, তাদের পাওনা ফাঁকি দিতেই এমন ফন্দি আপনারা এঁটেছেন।” কর্তা ব্যক্তি রীতিমত অস্বীকার করেন। বলেন ” তারা স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।”

ঔষধ ছাড়াই সারাজীবন কিভাবে সুস্থ থাকবেন, জেনে নিন উপায়।  

কর্মী ছাঁটাই

এবারে একটি মজার গল্প বলি। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার নিয়ে আন্দোলনে সারা বিশ্ব কাঁপিয়ে দিয়েছিল রাশিয়া, চায়নার তৎকালীন কম্যুনিস্টরা। দুটো দেশেই কম্যুনিজম প্রতিষ্ঠা পায়। তার পর কি হয় ? সেটা বুঝতেই শুনুন –

শ্রম দিবসের প্যারেডে হাজিরা দেয়ার জন্য রাবিনোভিচ কে ডাকা হয়েছে কারখানার পার্টি শাখায়। তাকে বলা হল, এই কারখানার সবচেয়ে প্রবীণ শ্রমিক হিসেবে আপনাকে কমরেড চেরনেনকোর ছবি বহনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। 

প্রতিবাদ জানিয়ে রাবিনোভিচ বললেন, না কমরেড আমাকে এই দায়িত্ব দেবেন না। লেনিনের প্রতিকৃতি নিয়ে প্যারেডে গিয়েছি, লেনিন মারা গেছেন। গিয়েছি স্তালিনের ছবি নিয়ে মারা গেছেন স্তালিনও। ক্রূসচেভের ছবি নিয়ে গিয়েছি, তিনিও গেছেন পরলোকে। ব্রেঝনেভের ছবি নিয়েছি, তিনিও বিদায় নিয়েছেন পৃথিবী থেকে। আর এই তো কদিন আগে বহন করেছি আন্দ্রোপভের প্রতিকৃতি। তিনিও আজ আর এই ধরাধামে নেই। সব শুনে পাশ থেকে এক শ্রমিক প্রস্তাব দিলেন,  রাবিনোভিচ কে শুধু চেরনেনকোর ছবি নয় কমিউনিজমের লাল পতাকাও বইতে দেয়া হোক। 

জীবনে সফল হতে হলে কোন বইটি পড়বেন। 

কর্মী ছাঁটাই  

২০/১২/২০২৩ – সেলিম হোসেন – ছবি গুলো প্রতীকী  

2 thoughts on “কর্মী ছাঁটাই – চায়না টেকনিক এবং সারা বিশ্বে। একটি রাশিয়ান গল্প। 1. Golden handshake – The China Technique

  1. Pingback: পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন ৪ টি ঘটনা। 4 incidents of penis display. - OVIZAT

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *