কফি
প্রতিদিন বিশ্বে ২২৫ কোটি কাপ কফি খাওয়া হয়। এই পানীয়ের সাথে ছাগলের সম্পর্ক কি ? হেলদি লাইফ স্টাইলের অনুসারীরা খান বুলেট কফি। অন্যরা খান একদম ব্লাক অথবা দুধ, চিনি, ক্রিম মিশিয়ে। আমারা বিস্তারিত জানব, কোথা থেকে এল এই পানীয়। এর উপকারিতা কি ?
খানিক টা সালাদ এবং এক মগ বুলেট কফি একবেলার খাবার হিসেবে যথেষ্ট হয়। কারন এতে থাকে এক চামচ কফি, ২ চামচ নারিকেল তেল, একচামচ ঘি, একটু খানি কোকোয়া বা মাকা পাউডার, সামান্য পিঙ্ক সল্ট। সবকিছু মিলে তৈরি হয় এক মগ পুষ্টিকর পানীয়। যা অনেক সময় ধরে শরীরে এনার্জি যোগায়।
জেনে নিন – ওজন কমানোর সহজ উপায় প্রথম ধাপ
জেনে নিন – পেশী বহুল শরীর নাকি সুস্থতা কোনটা আগে
মানব ইতিহাসে কবে থেকে এই পানীয় খাওয়া শুরু ?
ইথিওপিয়ার এক রাখাল। নাম কালদি। মালভূমির তৃণ ভুমিতে ছাগলের পাল চড়িয়ে বেড়ান। কালদি লক্ষ্য করলেন ইদানীং ছাগলের পাল রাতে ভ্যা ভ্যা করছে। ঘুমাচ্ছে না।
কালদির সন্দেহ হয় ” ছাগল গুলো হয়ত কোন কিছু খাচ্ছে।” এ কারনেই রাতে তাদের ঘুম হচ্ছে না। পরদিন ছাগল গুলোর দিকে বিশেষ নজর দিলেন কালদি। খেয়াল করলেন ছাগলের পাল মালভূমির একধরনের তৃণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যে তৃণের ডালে ঝুলছে চেরির মত লাল রঙের ফল। ছাগলের পাল সেগুলোই খাচ্ছে।
কালদি নিজেও ফল ছিঁড়ে মুখে দিলেন। তেতো স্বাদ, কয়েকটি খেলেন। খেয়াল করলেন নিজেকে বেশ চাঙ্গা মনে হচ্ছে। অনেক গুলো ফল সাথে নিয়ে গ্রামে ফিরলেন।
জেনে নিন – সুস্থতা ফিটনেসে প্রবায়োটিকের গুরুত্ব
ধর্মীয় এক মুরুব্বীকে বিষয়টি জানালেন। মুরুব্বী অনেক গুলো ফল পানিতে জ্বাল করলেন। এরপর সে পানি কয়েক জনকে নিয়ে পান করলেন। সবার এনার্জি বেড়ে গেল। রাত জেগে খুব সহজেই ইবাদত করতে পারলেন।
এভাবেই মানব ইতিহাসে যোগ হল জনপ্রিয় পানীয় ।
পড়ুন – জনপ্রিয় এই পানীয় সম্পর্কে আরও জানতে। বি বি সির রিপোর্ট।
কফির ৬ টি উপকারিতা।
১. মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস: ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক রিসার্চে জানা গেছে, যারা নিয়মিত কফি খান, কিন্ত যারা খান না, তাঁদের তুলনায় মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেক বেশি কমে যায়। এতে থাকা উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। মৃত্যুর সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
২. কার্ডিও ভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি: কফির মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-এর পরিমান গ্রিনটির থেকেও বেশি। প্রতিদিন ২ থেকে ৩ কাপ যারা খান, তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা অনেক বেশি কমে যায়।
৩. টাইপ টু ডায়াবেটিস: ক্যাফাইন যুক্ত বা ডি ক্যাফিনেটেড যুক্ত কফি পান করলে ডাইবিটিসের সমস্যাও কমে যায়। প্রতিদিন দৈনিক এক কাপ পানীয় এই রোগের সমস্যা কমিয়ে দিতে পারে ৭ শতাংশ।
৪. লিভারের স্বাস্থ্যের উন্নতি: গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন কফি খেলে ফ্যাটি লিভার, লিভার ফাইব্রোসিস, লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়। যেহেতু লিভার সম্পর্কিত রোগের প্রবণতা আমাদের অনেক বেশি তাই এটা খেলে এই সমস্যা থেকে বেশ অনেকটাই মুক্ত থাকা যায়।
৫. বিষন্নতার ঝুঁকি হ্রাস: নিয়মিত কফি খেলে বিষন্নতা বা অ্যালজাইমার রোগের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বয়স্ক জনসংখ্যার হার দিনের পর দিন দ্রুত বাড়ছে দেশে। সেক্ষেত্রে পানীয়টি খেলে বয়স্কদের মধ্যে অ্যালজাইমার হওয়ার ঝুঁকি ৬৫ শতাংশ কমে যায়।
৬. মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি: কফির প্রাথমিক সক্রিয় উপাদান ক্যাফাইন মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন খেলে মেজাজ উন্নত হয় । স্মৃতিশক্তি বাড়ে ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
কফিতে যদি চিনি যোগ করেন তাহলে এর গুনাগুন নষ্ট হয়ে যায়। সকালে বা বিকেলে খাবেন। ঘুমের সমস্যা থাকলে রাতে খাবেন না। প্রতিদিন ১ বা ২ কাপের বেশি খাওয়া একেবারেই ভালো নয়। অতিরিক্ত খেলে স্বাস্থ্যের সমস্যা হতে পারে।
জেনে নিন – কফিতে কি মিশালে চর্বি ঝরবে দ্রুত।
কফি খাওয়ায় সাবধানতা
যারা নিয়মিত সকালে ব্যায়াম করেন। আমাদের হেলদি লাইফ স্টাইল অনুসরন করেন। তাদের জন্য দিনের শুরুতে বুলেট পানীয় টি টনিকের মত কাজ করে। প্রচুর এনার্জি দেয়। এছাড়া, যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত ভিনেগার খাবেন। এসিডিটি দূর করবেন। এরপর পানীয়টি খাওয়া শুরু করবেন। ওজন কমানোর জার্নিতে থাকলে এটি আপনার জন্য আবশ্যিক খাবার।
সেলিম হোসেন – ১৭/০৫/২০২৪ ইং – ছবি গুলো পেক্সেল থেকে নেয়া।
Reference : Dr Eric berg, Dr Mujibul Haque, Dr Jahangir Kabir, Dr Mujibur Rahman, Dr Mandell, Dr Jason Faung, Dr Sten Ekberg and many medical health journals.